Travel Bangladesh

Home
Bangladesh
Dhaka
Travel Bangladesh

www.bd.tours
(2)

Address

Kha-215, Merul Badda, Pragati Sharoni Road
Dhaka
1212

Telephone

+8801768200000

Website

http://www.bd.tours/

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Travel Bangladesh posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Travel Bangladesh:

Videos

Who Wants to go this restaurant....????

Shortcuts

ভালো গল্প বলতে চান?

গল্প বলা বা গল্প করা যাকে আমরা ইংরেজীতে বলি স্টোরি টেলিং। এটা একটা আর্ট বা পারফর্মিং আর্ট। আজকাল পৃথিবীর অনেক দেশে এটা একটা পেশাও বটে। মজার মজার গল্প বলা শুধু নয়। সাধারণ গল্পকে মজার করে বলার এই সৃজনশীল ক্ষমতা একজন মানুষকে দশজনের থেকে আলাদা করে দেয়। এবং যশ খ্যাতি এনে দেয়। এভাবে গল্পের মতো করে যারা বিভিন্ন বিষয়কে ব্যাখ্যা করতে পারেন বা বলতে পারেন। পেশাগত জীবনেও তারা সফলতা ছিনিয়ে আনতে পারে। আজ আমরা এই গল্পবলা বিষয় নিয়ে মুখ খুলবো। ভাবছেন মুখ খুলবো বলছি কেন? কোনো গোপন তথ্য ফাঁস করবো নাকি। ব্যাপারটা অনেকটা তাই, যদি আপনি বিষয়গুলো আগে থেকে না জানেন। চলেন মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।

গল্প ও বিষয় নির্বাচন

এটা খুব একটা জটিল বিষয়। আপনি কি ধরনের গল্প বলছেন আর কাদের কাছে বলছেন। এটা আপনাকেই নির্বাচন করতে হবে। আপনি একটা গল্প জানেন বলে সেটা সবার কাছে বলবেন এমনটা নয়। শিশুরা ভৌতিক ও রহস্যগল্প পছন্দ করে। অনেক সময় ভয় পায়। তাই সে বিষয় মাথায় রেখে গল্প বলতে হবে। বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহী নয়। এমনকারো কাছে নিশ্চই সাইন্স ফিকশন ভালো লাগবেনা। কোনো গুরুগম্ভীর পরিবেশে হাসির গল্পও ভালো নয়। তবে পুরিস্থিতি অনুকূল থাকলে যেকোনো বক্তৃতাই হাসির গল্প দিয়ে শুরু করা যায়। যেখানে গল্প বলছেন সেখানে আপনার সময় কতক্ষণ সেটা মাথায় রেখেও গল্প নির্বাচন করতে হয়। তবে একই ধরনের বা একই রুচির কিংবা একই বয়সের শ্রোতা থাকলে গল্প নির্বাচন সহজ হয়। কিন্তু যখন মিশালো লোকজন থাকে তখন সবাইকে বিনোদিত করা বেশ কঠিন হয়ে যায়। স্পষ্ট ও শুদ্ধ উচ্চারণ, সঠিক শব্দপ্রয়োগ, ছোট বাক্য প্রতিটি শব্দ স্পষ্ট করে বলতে হবে। বেশী দ্রুত বা বেশী ধীর গতিতে গল্প বলা যাবেনা। উচ্চারণ শুদ্ধ হতে হবে। আঞ্চলিক টান থাকা বিরক্তিকর। তবে গল্পের প্রয়োজনে আঞ্ছলিকতা ব্যবহার করলে সেটা আলাদা কথা। অনেকের ভাষাজ্ঞানের অভাবে ভুল শব্দ প্রয়োগ করে ফলে গল্পটা মার খেতে পারে। অবশ্যই ছোট ছোট বাক্য গঠন করে গল্প বলার অভ্যাস রাখতে হবে।

ধারাবাহিকতা, ক্লাইমেন্ট, টেনশন ও নাটকীয়তা

গল্পে অবশ্যই ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। তবে কোনো কারণে রহস্য বা আকর্ষণ সৃস্টি করার জন্য আগে পিছে করতে হলে পরিকিল্পিত ভাবে করতে হবে। প্রয়োজনে বাসায় আয়নার সামনে দাড়িয়ে বা পরিচিত বন্ধুদের সামনে গল্পটি নিজের প্লানমতো বলে প্রাকটিস করে নিতে হবে। এতে কোনো অসঙ্গতি থাকলে তা বেরিয়ে আসবে। গল্পে টান টান উত্তেজনা তৈরী করার জন্য ক্লাইমেক্স তৈরী করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে মূল রহস্যটা সবার শেষেই বলতে হবে। গল্পটা এমনভাবে বলতে হবে, যেমন দর্শক ঠিক বুঝতে না পারে কি হতে চলেছে? আমাদের বেশীর ভাগ গল্প বা সিনেমার সমস্যা হলো দর্শক বা শ্রোতা না দেখে বা না শুনেই বলতে পারে কি হতে চলেছে। তাই এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অবশ্য নাটকীয়তা থাকা লাগবে। গতানগতিক প্রতিদিনের জীবনের গল্প কাউকে কাছে টানবেনা। হাসিমুখ, চোখে চোখ, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কথককে হাসিমুখ ধরে রাখতে হবে। প্রয়োজনে অভিনয় করে দেখিয়ে দিতে হবে। কান্নার প্রসঙ্গে কানতে হবে। শ্রোতাদের চোখে চোখ রেখে গল্প বলতে হবে। এবং হাতপা সবাই কথকের সাথে গল্প বলছে এমন হতে হবে। মানে রোবটিক হওয়া যাবেনা। সারা শরীর দিয়েই পারফর্মিং করতে হবে। আরো ভালো হয়, গল্পের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন করে দর্শককে গল্পের ভেতরে নিয়ে আসতে পারলে। প্রয়োজনে গলা চিকন মোটা, হাসি কান্না, কাশি বিভিন্ন প্রাণীর ডাক, এগুলো গল্পের প্রয়োজনে কথা বলার ছলে অভিনয় করে দেখাতে পারলে গল্প প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে। বিভিন্ন জিনিসের আকার আকৃতি হাত দিয়ে পা দিয়ে বোঝাতে পারলে। তার গতি প্রকৃতি মুখাবয়ব ও দেহভঙ্গি দিয়ে জীবন্ত করে তোলার মাঝেই একজন গল্পকারের স্বার্থকতা।

গল্পের ভেতর গল্প আর বিরতি

গল্পের ভেতরে গল্প বলে একটা কথা আছে। সেটা মাথায় রাখতে হবে। যেমন মূল গল্পটা হলো একজন স্বর্নকারের জীবনী নিয়ে। সেখানে স্বর্ণকারের শিশুপুত্র একটা চরিত্র আছে। তাকে ঘিরেও কিছু ঘটনার ঘনঘটা আছে। সেগুলোও গল্পের অংশ। মাঝে মধ্যে কৌশলগত বিরতি দিয়ে অন্য কিছু প্রাসঙ্গিক ছুটকি, ছন্দ গান কবিতা কৌতুক বলা যেতে পারে। বিরতির ফাঁকে প্রশ্ন উত্তর কিংবা কুইজ থাকতে পারে। সেজন্য গল্পটিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। কোথায় বিরতি দিতে হবে সেটা আগেই ঠিক করে রাখা চাই। এমন একটা স্থানে বিরতি থাকবে যেন দর্শক গল্পের বাকী অংশ শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। গল্পের আকর্ষনীয় সূচনা ও চমৎকার সমাপ্তি গল্পটি এমনভাবে শুরু হবে। যেন শ্রোতার সমস্ত মনোযোগ গল্পের দিকে আসে। যেমন এক সময় গল্প শুরু হতো ‘‘ একদেশে এক রাজা ছিলো’’ সেদেশে এক গ্রাম ছিলো, সেখানে এক রাখাল ছিলো। তারচেয়ে এখন গল্প শুরু হতে পারে, ‘‘হঠাৎ বিকট এক শব্দে গ্রামের লোকদের ঘুম ভেঙ্গে গেল। তারা এমন শব্দ কেউ কখনো শুনেনি। সে গ্রামের রাখাল বালকও এমন শব্দ কখনো শুনেনি। রাজা শুনেছে কিনা কেউ জানে না।’’ এভাবে পরের চরিত্রগুলো আসবে। এখন শব্দের রহস্য জানার জন্য শ্রোতাদের কান খাড়া আর চোখ বড়ো হয়ে যাবে। আর গল্পের শেষে শ্রোতারা যেন একটু অনুভূতি নিয়ে যায়। সেটা যে খুশি হবে তা নয়। শিক্ষামূলক হতে পারে। আফসোসও হতে পারে। ব্যথাতুর হতে পারে। কারণ গল্পের সমাপ্তি বিভিন্ন রকম হতে পারে কিন্তু সেই রকমের সাথে অনুভূতিটা শ্রোতাদের মধ্যে জাগিয়ে তোলার কাজটি কথককে করতে হবে। যেমন ডালিমকুমার আর কংকাবতীর গল্প শুনে সুখীভাব নিয়ে শ্রোতারা আসন থেকে উঠবে। আর কবি জসিম উদ্দীন এর নকশী কাঁথার মাঠ গল্প শুনে সাজু আর রুপাই এর জন্য বুকভরা কষ্ট নিয়ে ঘরে ফিরবে।

ভালো গল্প বলতে হলে

ভালো গল্প বলতে হলে, যে কাজটা করতে হবে। প্রচুর গল্প পড়তে হবে। শুনতে হবে। এবং লোকজনকে গল্প শোনাতে হবে। এভাবে এক সময় গল্পবলার অভ্যাসটা পোক্ত হয়ে উঠবে। দেশী বিদেশী বিভিন্ন রকম গল্প হতে পারে। তবে গল্পে যেন কিছু শিক্ষনীয় থাকে।

লেখা: জাহাঙ্গীর আলম শোভন

https://www.facebook.com/jahanshovon