07/07/2022
পবিত্র হজ্জ পালনের সময় হজ্জযাত্রীরা বিভিন্ন ধরণের রোগবালাই যেমন; উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, অ্যানজাইনা, লেটেন্ত হার্ট ফেলিউর বা অন্যান্য আরো হৃদরোগজনিত সমস্যায় ভুগেন। তাই এই সময়ে তাদেরকে নিজের রোগ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কারণ, হজ্জ যাত্রীদের মধ্যে অন্যান্যদের তুলনায় হৃদরোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কিছুটা বেশি। হজ্জযাত্রায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষানিরীক্ষা করে হৃদরোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
১) হার্টের সমস্যায় বিভিন্ন রোগ অনুযায়ী এন্টি হাইপারটেন্সিড ওষুধ, এন্টি হার্ট ফেইলিউর ওষুধ, এন্টি হার্ট অ্যাটাক ওষুধ, এন্টি অ্যানজাইনাল ওষুধ, এন্টি ডায়াবেটিক এবং এন্টি কোলেস্টেরল ড্রাগ সাথে রাখুন।
২) হজ্জে অনেক হাঁটাহাঁটি, কায়িক পরিশ্রম করতে হয় সেক্ষেত্ৰে হৃদরোগীদের হঠাৎ বুকে ব্যাথা বা চাপ অনুভব বা শ্বাসকষ্ট হলে জি টি এন স্প্রে জিহ্বার নিচে এক থেকে দুইবার স্প্রে করতে হবে।
৩) নিয়মিত খাবারে তৈলাক্ত-চর্বিযুক্ত এবং লবণজাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। প্রতিবেলার খাবারে উদ্ভিজ্জ খাবার যথা- শাক- সবজি, ডাল এবং বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে হবে।
৪) হজের সময় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যেসব ফ্রি খাবার-দাবার সরবরাহ করা হয় যেমন- পোলাও, বিরিয়ানি, শরবত, মিষ্টিজাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না। সবধরনের বাসি ও ভাজা-পোড়া খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
৫) সবসময় তাড়াহুড়ো করে গাড়িতে উঠানামা করা বা শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা বা মুজদালেফার মাঠে তাড়াহুড়া করে পাথর কুড়ানো যাবে না এবং আরাফাতের ময়দানে বেশি উঁচুতে উঠানামা করা যাবে না।
৬) সারাদিনে সঠিক পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পানি স্বল্পতা এড়াতে গরমের এই দেশে খেজুর, হালকা স্ন্যাক্স জাতীয় খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে সঙ্গে রাখুন এবং ঠিক সময়ে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৭) পেট ফাঁপা ও অন্যান্য পরিপাকতন্ত্রের অসুবিধা হলে যেমন- এন্টাসিড, ফেমোটিডিন গ্রুপ, ওমিপ্রাজল জাতীয় ওষুধ সঙ্গে রাখুন। ডায়রিয়া, বমি হলে বা অতিরিক্ত ঘামের কারণে শারীরিক অবসাদ কাটাতে ওরস্যালাইন খাবেন।
৮) হজ্জ পালনের সময় হাজীরা প্রায় গলা ব্যথা , হাঁচিকাশি ও জ্বরে ভুগেন যা অতিরিক্ত গরম ও ঠাণ্ডার সংমিশ্রণে হয়ে থাকে। কাজেই, এই ব্যাপারে সচেতন থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ যেমন- প্যরাসিটামল, এন্টি হিস্টামিন, এন্টি কফ, এন্টিবায়োটিক সাথে রাখুন।
৯) বিভিন্ন টেনশন থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। গরমজনিত শারীরিক অসুস্থতা বা হিটস্ট্রোক ও সান বার্ন এড়াতে সাদা ছাতা বা মাথায় কাপড় ব্যবহার করুন। মাংসপেশি ও জয়েন্টের ব্যথায় আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন–জাতীয় ওষুধ খাবেন।
প্রফেসর ডাঃ সাখাওয়াৎ হোসেন
এমডি, এফপিজিসিএস (মেডিসিন), পিএইচডি (কার্ড.), পোস্ট ডক্টরাল (কার্ড)