05/06/2024
দুঃখ-কষ্টের কথা শুধু আল্লাহর কাছেই বলা উচিত। এতে বেশ কিছু উপকারিতা আছে।
রসুল ﷺ বলেন, “যে ব্যক্তি অভাব-অনটনে পড়ে তা মানুষের নিকট উপস্থাপন করে (অর্থাৎ মানুষের উপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়ে), তার অভাব-অনটন (পুরোপুরি) দূর হয় না। আর যে ব্যক্তি অভাব-অনটনে পড়ে তা আল্লাহর নিকট উপস্থাপন করে তবে অবশ্যই আল্লাহ তাকে দ্রুত অথবা বিলম্বে রিযিক দান করেন।” [ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ২৩২৬; হাদিসটি সহিহ]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, “...আল্লাহ তাকে অমুখাপেক্ষী করেন—শীঘ্রই মৃত্যুর মাধ্যমে অথবা শীঘ্রই ধন-সম্পদ দিয়ে।” [ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান: ১৬৪৫; শায়খ আলবানি, সিলসিলা সহিহাহ: ২৭৮৭; হাদিসটি সহিহ]
বিখ্যাত আল্লাহওয়ালা বুযুর্গ শাকিক আল-বালখি (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো দুঃখ-দুর্দশার ব্যাপারে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে অভিযোগ করে, সে ইবাদতের মিষ্টতা অনুভব করতে পারে না।’ [আস সিয়ার: ৯/৩১৫]
কেউ যখন শুধু আল্লাহর কাছেই নিজের সমস্যার কথা পেশ করে, তখন তার ঈমান বৃদ্ধি পায়, তাওয়াক্কুল মজবুত হয়। কারণ সে তখন একমাত্র আল্লাহর কাছেই সমাধান তালাশ করে, আল্লাহকেই আপন মনে করে।
দেখুন, নবি ইয়াকুব (আ.) কত কষ্টেই-না ছিলেন! প্রিয়তম সন্তান ইউসুফকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তবুও শুধু আল্লাহর কাছেই তাঁর দুঃখ-বেদনার অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন। কুরআনে তাঁর অভিব্যক্তি এসেছে এভাবে—
إِنَّمَا أَشْكُو بَثِّي وَحُزْنِي إِلَى اللَّهِ
‘‘আমি কেবল আল্লাহর কাছেই আমার অস্থিরতা ও দুঃখ-কষ্টের ব্যাপারে অনুযোগ করছি।’’
[সুরা ইউসুফ, আয়াত: ৮৬]
আল্লাহ তাঁর ভারাক্রান্ত হৃদয়ের আকুতি শুনেছেন। শীঘ্রই ইউসুফ (আ.)-কে সম্মানিত করে তাঁদের মধ্যে সাক্ষাৎ ঘটিয়েছেন।
বিপদে-মুসিবতে যখন কেউ মানুষের সাথে কিছু শেয়ার না করে শুধু আল্লাহর কাছেই চোখের পানি ফেলে, তখন আল্লাহ অত্যন্ত খুশি হন। পূর্ববর্তী নেককার ব্যক্তিদের একটি বৈশিষ্ট্য ছিলো যে, তাঁরা নিজেদের দুঃখ-বেদনা মানুষের কাছ থেকে ঢেকে রাখতেন আর আল্লাহর কাছে মুনাজাতে পেশ করতেন।
তবে, সমস্যার কথা শেয়ার করলে যদি সমাধানের সম্ভাবনা থাকে, তাহলে শেয়ার করতে সমস্যা নেই। নবিজি ও সাহাবিগণের জীবনে এমন অনেক ঘটনা আছে।
✍️Tasbeeh